শতী সহস্রাননা — নীলাঞ্জন মুখার্জ্জী

দারুণ একটা মিথলজিকাল হরর পড়লাম। শুরুর কয়েকটা অধ্যায় পড়ে সত্যি বলতে গা শিরশির করে উঠছিল! এমন ভিজ্যুয়াল বুনেছেন লেখক রাতের বেলা একটু ভয়ই লাগছিল! সর্বশেষ তুম্বাড় সিনেমাতে এত দারুণ হরর পরিবেশ পেয়েছিলাম।

বইটা যেহেতু হিন্দু মিথলজি-নির্ভর, এখানে পৃথিবীর আনাচে কানাচে থাকা সকল মিথের সাথে একটা সামঞ্জস্য টানা হয়েছে। এই অংশগুলো বেশিরভাগ সময়েই চমকপ্রদ। সামান্য কিছু জায়গায় একটু পরিমার্জন করা যেত।

তিন বাহু দশ মুখ বইয়ে যেভাবে সমস্ত ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু ভারতবর্ষে দেখানো হয়েছে, এটাও ঐ অর্থে সিমিলার। কিন্তু মোটাদাগে পার্থক্যটা হলো, লেখক মুক্তমন রাখতে চেয়েছেন সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু বিষয়ক আলাপে। অর্থাৎ ক্রেডল অভ সিভিলাইজেশন প্রসঙ্গে বলতে চেয়েছেন সভ্যতা বরং একে অপরকে প্রভাবিত করে, এটা একটা চলমান ধারা।

চরিত্রগুলো বিশেষ করে প্রথমা চরিত্রটা সবথেকে বেশি ব্যপ্তি পেয়েছে গল্পে। তার পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোর মনস্তাত্বিক টানপোড়েন আশ্চর্যরকম চমৎকার ফুটেছে। ফলে হরর গল্পের ভিক্টিম হিসেবে যে অসহায়ত্ব সেটা পাঠক হিসেবে আমাকে দারুণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে।

বইটা সম্পর্কিত এত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সাথে নিজেকে মেলাতে পারলাম না। খানিকটা আশ্চর্য বোধ করলাম।

সংযুক্তি, আমার আসলে তিন বাহু দশ মুখ, আরিন ও আদিম দেবতার উত্থান — এই বইগুলোও ভাল লেগেছে। সুতরাং, এটা একটা লিটমাস টেস্ট—এই বইগুলো ভাল লাগলে আপনারা সম্ভবত আমার ধারার পাঠক। অনুগ্রহ করে জানাবেন।

বই : শতী সহস্রাননা
লেখক : নীলাঞ্জন মুখার্জ্জী
প্রকাশনা : চিরকুট
প্রকাশকাল : ২০২০
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ২৮৮
মলাট মূল্য : ৪০০

Leave a Reply