চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ — ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

দিন দিন কল্পবিজ্ঞান ও বাস্তবের মাঝে দূরত্ব সংকুচিত হচ্ছে – অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক অটোমেশন দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পারসন অফ ইন্টারেস্টের দ্য মেশিন বা সামারিটান যেমন অবিশ্বাস্য বিষয় না তেমনই ওয়েস্টওয়ার্ল্ডের ডোলোরেস-ও ফ্যান্টাসি থাকতেছেনা আর! হার-এর থিওডোর যেমন অপারেটিং সিস্টেম সামান্থা’র সাথে সম্পর্ক করেছিলো – তেমনই আপনিও “হেই সিরি” বলে কার্যত প্রায় সেরকমই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন! চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বার-প্রান্তে দাঁড়িয়ে আমরা – যেখানে মানুষের রিয়েলিটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত হচ্ছে, ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল ও বায়োলজিক্যাল সীমারেখা।

এমতাবস্থায় বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়, আসন্ন পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রস্তুতি কেমন, মূল তিন অর্থনৈতিক স্তম্ভের সাথে প্রযুক্তির সমন্বয়, অবকাঠামো, শিক্ষাব্যবস্থা, শ্রমবাজার, কর্মসংস্থান – এসবই আলোচনার বিষয়বস্তু বইয়ের। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে টেলিকম, ব্যাংকিং, শ্রমবাজার, শিক্ষাস্তরের আন্তঃসংযোগ – মোটা দাগে এগুলো নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।

অত্যন্ত সুখপাঠ্য, পরিষ্কার ও সহজভাবে বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সমস্যা সনাক্তকরণ ও তা মোকাবেলা করার জন্য পর্যাপ্ত রসদে ভরা। এক নাগাড়ে পড়ে যেতে কোনই সমস্যা হয়নি আমার – এতোটাই প্রাঞ্জল লেখা। টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বধারণা সহায়ক হিসেবে ছিল তবুও আমার মনে হয়না কারোর তেমন কোন সমস্যা হবে বুঝতে। সংযুক্ত টীকা ও সংজ্ঞা সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সহায়তা করবে আমার বিশ্বাস।

বাংলাদেশে যদিও কখনো “ইউটোপিয়া” আসে তবে বোধয় এমন সিস্টেমেটিকভাবেই আসবে – বিভিন্ন মহলের মধ্যে সমন্বয়ে। কোন সেক্টরে কীরকম সমস্যা সেটা আইডেন্টিফাই করা এমন শক্ত কোন কাজ না। লেখকের বক্তব্য প্যারাফ্রেজ করলে – শনাক্তকরণ এমন কোন ধাঁধা নয় যা সমাধান করা যাবেনা না, শুধু দরকার সরকারের সদিচ্ছা। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় না আমরা যারা মেজরিটি, সাধারণ মানুষ তাদের পক্ষে ব্যক্তি পর্যায়ে সিস্টেমের কোন পরিবর্তন আনা সম্ভব! সে অর্থে আমি জানিনা এই বইয়ের সাধারণ পাঠকরা নতুন করে হতাশায় পড়বেন কিনা এই ভেবে যে একটু চেষ্টা করলেই তো নীতি নির্ধারকরা পরিবর্তন আনতে পারতো! আমি জানিনা তারা কি ঘুম থেকে জাগবেন না কখনো?

হাইলি রিকমেন্ডেড।

বই : চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ
লেখক : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
প্রকাশনা : আদর্শ
প্রকাশকাল : ২০২০
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ৩৩৪
মলাট মূল্য : ৬৪০

Leave a Reply